নিজস্ব প্রতিবেদক: গত এক বছরে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) শেয়ারবাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে রেকর্ড পরিমাণ জরিমানা আরোপ, নীতি সংস্কার এবং বাজার কাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, এসব উদ্যোগ বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনর্গঠনে সহায়তা করবে, যদিও এখনও কিছু বড় চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।
রেকর্ড পরিমাণ জরিমানা
বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে গত এক বছরে শেয়ার কারসাজির মামলায় ১,১০০ কোটি টাকার বেশি জরিমানা আরোপ করা হয়েছে—যা কমিশনের ৩০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। জরিমানার হারও পূর্বের ২০% থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৯০% করা হয়েছে।
সবচেয়ে আলোচিত মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার কারসাজি, যেখানে পাঁচ প্রতিষ্ঠান ও চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৪২৮ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া সালমান এফ রহমান, আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলামকে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়া আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ১৯০ কোটির বেশি জরিমানা করা হয়েছে, যার মধ্যে জাতীয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নামও রয়েছে।
নতুন নীতি ও কাঠামোগত পরিবর্তন
সরকার পরিবর্তনের পর গঠিত টাস্কফোর্স আইপিও, মার্জিন ট্রেডিং ও মিউচুয়াল ফান্ড সংস্কারের ব্লুপ্রিন্ট জমা দিয়েছে। আইপিও অনুমোদন প্রক্রিয়া এখন ডিজিটালাইজেশনের পথে, যা স্বচ্ছতা বাড়াবে এবং প্রভাব খাটানোর সুযোগ কমাবে।
সাম্প্রতিক বাজেটে বিও অ্যাকাউন্ট ফি ৪৫০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫০ টাকা, ব্রোকারদের টার্নওভার ট্যাক্স ০.০৫% থেকে ০.০৩% এবং তালিকাভুক্ত ও অনতালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের করের ব্যবধান আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এসব পরিবর্তন বিনিয়োগকারীদের খরচ কমিয়ে অংশগ্রহণ বাড়াতে সহায়ক হবে।
বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা
আগের সরকারের পতনের পর ডিএসইএক্স সূচক তিন দিনে ৫৮৯ পয়েন্ট বেড়ে ৬,০০০-এর ওপরে উঠেছিল। যদিও পরে সূচক কিছুটা কমে যায়, বর্তমানে তা ৫,৩৫০-এর ওপরে স্থিতিশীল রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি হ্রাস এবং ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার কমা বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
তবে চ্যালেঞ্জও রয়েছে—গত এক বছরে কোনো নতুন আইপিও আসেনি এবং বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা প্রায় ১% হ্রাস পেয়েছে। ডিএসই চেয়ারম্যানের মতে, দীর্ঘমেয়াদে নীতি সংস্কার ও স্বচ্ছতা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনবে এবং বাজারকে স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে।
আল-মামুন/
নিউজটি আপডেট করেছেন : Jatiyo Potrika
শেয়ারবাজারে বড় জরিমানা, নতুন নীতি ও বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা
- আপলোড সময় : ১২-০৮-২০২৫ ০৪:৩৭:২১ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১২-০৮-২০২৫ ০৪:৩৭:২১ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ